Home |  | Audio |  | Index |  | Verses

রাজাবলি ২ 2 Kings

অধ্যায় : 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25
1 অরামের রাজার সেনাপতি ছিল নামান| রাজার কাছে নামান ছিল এক জন মহান এবং খুব শ্রদ্ধেয ব্যক্তি, কারণ প্রভু সব সময় তাঁর মাধ্যমে অরামকে বিজয়ের পথে নিয়ে য়েতেন| নামান খুবই শক্তিশালী ও মহান হলেও তিনি কুষ্ঠ রোগাএান্ত ছিলেন|
2 অরামীয়রা বহুবার ইস্রায়েলে যুদ্ধ করতে সেনা-বাহিনী পাঠিয়েছিল| এই সব সেনারা এখানকার লোকদের এীতদাস করেও নিয়ে গিয়েছে| একবার তারা ইস্রায়েল থেকে একটা বাচচা মেয়েকে তুলে নিয়ে যায়| কালএমে এই ছোট মেয়েটি নামানের স্ত্রীর এক দাসীতে পরিণত হয়|
3 মেয়েটি নামানের স্ত্রীকে বলল, “মনিব শমরিয়ায বাসকারী ভাব্বাদীর সঙ্গে দেখা করলে তিনি নিশ্চয়ই তাঁর কুষ্ঠরোগ সারিযে দিতেন|”
4 নামান তাঁর মনিবকে (অরামের রাজাকে) গিয়ে ইস্রায়েলীয় মেয়েটা কি বলেছে তা বললেন|
5 তখন অরামের রাজা বললেন, “ঠিক আছে, তুমি এখনই যাও| আমি ইস্রায়েলের রাজাকে একটা চিঠি দিচ্ছি|”নামান তখন 750 পাউণ্ড রূপো, 6,000 টুকরো সোনা আর দশ প্রস্থ পোশাক উপহার স্বরূপ নিলেন এবং ইস্রায়েলে গেলেন|
6 নামানের সঙ্গে ইস্রায়েলের রাজাকে লেখা অরামের রাজার চিঠিও ছিল যাতে লেখা ছিল, “আমি আমার সেবক নামানকে কুষ্ঠরোগ সারানোর জন্য আপনার কাছে পাঠালাম|”
7 চিঠিটা পড়ে ইস্রায়েলের রাজা মনোকষ্টে তাঁর পোশাক ছিঁড়ে ফেলে বললেন, “আমি তো আর ঈশ্বর নই! জীবন-মৃত্যুর ওপর আমার যখন কোন হাত নেই, তখন কেন অরামের রাজা কুষ্ঠরোগাএান্ত এক জনকে আমার কাছে সারিযে তোলার জন্য পাঠালেন? এটা খুবই স্পষ্ট য়ে তিনি একটি যুদ্ধ বাধাবার পরিকল্পনা করছেন!”
8 ঈশ্বরের লোক ইলীশায় খবর পেলেন শোকার্ত ইস্রায়েলের রাজা তাঁর পোশাক ছিঁড়ে ফেলেছেন| তখন তিনি রাজাকে খবর পাঠালেন: “তুমি কেন পোশাক ছিঁড়ে কষ্ট পাচ্ছ? নামানকে আমার কাছে আসতে দাও, তাহলে ও বুঝবে ইস্রায়েলে সত্যি সত্যিই একজন ভাব্বাদী বাস করে!”
9 নামান তখন তাঁর রথ ও ঘোড়া নিয়ে ইলীশায়ের বাড়ির বাইরে এসে দাঁড়ালেন|
10 ইলীশায় এক জনকে দিয়ে খবর পাঠালেন, “যাও যর্দন নদীতে গিয়ে সাত বার স্নান করো, তাহলেই তোমার চামড়া ঠিক হয়ে যাবে আর তুমিও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে উঠবে|”
11 নামান খুবই রুদ্ধ হয়ে চলে গেলেন| তিনি বললেন, “আমি ভেবেছিলাম একবার অন্তত ইলীশায় বাইরে এসে তাঁর প্রভু ঈশ্বরের নাম নিয়ে আমার গায়ের ওপর হাত নেড়ে আমার কুষ্ঠরোগ সারিযে তুলবেন!
12 দম্মেশকের অবানা আর পর্পর নদীর জল ইস্রায়েলের য়ে কোন জলের থেকেই ভালো! ওই সব নদীতে গা ধুলে কেন হবে না?” নামান প্রচণ্ড রেগে গিয়ে ফিরে যাবেন বলে ঠিক করলেন|
13 কিন্তু নামানের ভৃত্যরা তাঁকে গিয়ে বললো, “মনিব, ভাব্বাদী যদি আপনাকে খুব শক্ত কিছু বলতেন, আপনি নিশ্চয়ই তা শুনতেন, তাই না? উনি যখন আপনাকে খুব সহজ একটা কাজ বলেছেন, সেটা অবশ্যই করা উচিত্‌| উনি তো বলেই ছিলেন, ‘ধুলেই তুমি শুচি হয়ে যাবে|”‘
14 নামান তখন ইলীশায়ের কথামতো,যর্দন নদীর জলে সাতবার ডুব দিলেন এবং নামানের দেহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও নিরাময় হয়ে উঠল| একেবারে শিশুদের ত্বকের মতোই নরম হয়ে গেল!
15 নামান আর তাঁর দলের সবাই তখন ইলীশায়ের কাছে ফিরে এলেন| ইলীশায়ের সামনে দাঁড়িয়ে নামান বললেন, “এতদিনে আমি বুঝলাম ইস্রায়েল ছাড়া পৃথিবীতে আর কোথাও কোন ঈশ্বর নেই! এখন আপনি অনুগ্রহ করে আমার থেকে একটা উপহার গ্রহণ করুন!”
16 কিন্তু ইলীশায় বললেন, “আমি প্রভুর সেবা করি এবং আমার প্রতিজ্ঞা, যতদিন প্রভু আছেন আমি কোন উপহার নিতে পারব না|”নামান উপহার নেবার জন্য ইলীশায়কে অনেক অনুনয় বিনয় করেও টলাতে পারলেন না|
17 তখন নামান বললেন, “আপনি যখন নিতান্তই কোন উপহার নেবেন না, অন্তত আমাকে ইস্রায়েল থেকে দু-টুকরি এখানকার ধূলো আমার দুটো খচচরের পিঠে চাপিয়ে নিয়ে য়েতে অনুমতি দিন| কারণ এরপর থেকে আমি আর কোন মূর্ত্তিকেই হোমবলি বা কোন নৈবেদ্য দেব না| আমি শুধুমাত্র প্রভুকেই বলিদান করব|
18 আর আমি আগে থাকতেই ক্ষমা চেয়ে প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে নিচ্ছি: ভবিষ্যতে আমার মনিব অরামরাজ যখন রিম্মোণের মন্দিরের মূর্ত্তিকে পূজো দিতে যাবেন, তাঁর ওপর ভর নামবে বলে আমায় সেখানে মাথা নীচু করতেই হবে| কিন্তু প্রভু য়েন সেজন্য আমাকে ক্ষমা করেন|”
19 ইলীশায় তখন নামানকে আশীর্বাদ করে বললেন, “যাও সুখে শান্তিতে থাকো|”নামান যখন ইলীশায়ের কাছ থেকে বিদায নিয়ে কিছু দূর গিয়েছেন,
20 ইলীশায়ের ভৃত্য গেহসি বলল, “দেখেছো, আমার প্রভু কোন উপহার না নিয়েই অরামীয় নামানকে ছেড়ে দিলেন| আমি বরঞ্চ এই বেলা গিয়ে ওর কাছ থেকে কিছু হাতানোর ব্যবস্থা করি!”
21 এই বলে গেহসি নামানের পেছন পেছন দৌড়তে লাগল|নামান যখন দেখতে পেলেন একজন কেউ ছুটতে ছুটতে আসছে তিনি তখন রথ থেকে নেমে গেহসিকে প্রশ্ন করলেন, “কি, সব ঠিক আছে তো?”
22 গেহসি বললো, “হ্যাঁ সব ঠিকই আছে| আমার মনিব আমাকে বলে পাঠালেন, ‘ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চলের ভাব্বাদীদের দলের দুজন এসেছে| অনুগ্রহ করে তাদের যদি 75 পাউণ্ড রূপো আর দু-প্রস্থ পোশাক-আশাক দাও তো বড়-ভালো হয়|”‘
23 একথা শুনে নামান বললেন, “75 পাউণ্ড কেন? 150 পাউণ্ড নাও!” তারপর নামান দুটো বস্তায 150 পাউণ্ড রূপো ভরে, তার সঙ্গে দু-প্রস্থ জামাকাপড় দিয়ে জোর করে তাঁর দুজন ভৃত্যকে গেহসির সঙ্গে পাঠালেন|
24 ভৃত্যরা এই সব জিনিস বয়ে পাহাড় পর্য়ন্ত নিয়ে আসার পর, গেহসি জিনিসগুলি নিয়ে ওদের ফেরত্‌ পাঠিয়ে দিল| তারপর ও এই সমস্ত জিনিস বাড়িতে লুকিয়ে রাখলো|
25 গেহসি এসে মনিবের সামনে দাঁড়ানোর পর ইলীশায় জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কোথায গিয়েছিলে?”গেহসি উত্তর দিল, “কোথাও না তো|”
26 ইলীশায় তখন বললেন, “শোন, নামান যখন রথ থেকে নেমে তোমার সঙ্গে দেখা করে, তখন আমার হৃদয় তোমার সঙ্গে ছিল, এটা টাকাপয়সা, জামাকাপড়, জলপাই কুঞ্জ, দ্রাক্ষা ক্ষেত, গরু, মেষ, দাস-দাসী নেবার সময় নয়|
27 এখন নামানের রোগ তোমার আর তোমাদের উত্তরপুরুষদের হবে| তোমাদের কুষ্ঠ হবে|”গেহসি যখন ইলীশায়ের কাছ থেকে চলে গেলেন, তখন ওর গায়ের চামড়া সাদা হয়ে গেল, বরফের মত সাদা|

Top |  |  পরের অধ্যায় - Next Chapter  |  | Index |  | Home
Full online version here [with search engine, multilingual display and audio Bible]